রফিকুল ইসলাম সাগর
একদিন মনের দুঃখে ঘোড়াটিকে নিয়ে বনবাসী হলেন। দিন শেষে রাত হয়ে এলো। ঘোড়াটিকে জড়িয়ে ধরে কাঁদতে কাঁদতে একটি দৈত্য তার সামনে এসে হাজির হলো। দৈত্যকে দেখে প্রথমে ভয় পেয়ে গেলেন। দৈত্য বললো ভয় পাবেন না মালিক আমি আপনার ক্ষতি করবো না। আমি ভাল দৈত্য আপনি আদেশ করুন আমি আপনার তিনটি ইচ্ছা পূরণ করবো। লোকটি খুব খুশি হয়ে গেলো। একটু অবাক হলো আলাদিনের চেরাগ ছাড়াই দৈত্য হাজির, যাই হোক। চোখের পানি মুছে দৈত্যকে বললো আমার মাথার চুল নেই। চুল গজানোর কী কোনো উপায় আছে? থাকবে না কেন আমার কাছে সব আছে বাড়ি,গাড়ি টাকা আপনি শুধূ আদেশ করুন মালিক। আমার বাড়ি,গাড়ি টাকা সবই আছে আমি আমার মাথার চুল চাই।
সাথে সাথে দৈত্য মন্ত্র পড়ে তার মাথায় চুল গজিয়ে দিলো। আসল চুল না নকল চুল টেনে দেখার পর নিশ্চিত হলো আসল চুল। লোকটি তো মহা খুশি। এত এত কবিরাজ,ডাক্তার যা করতে পারেনি দৈত্য কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে তা করে ফেলল।
--আপনার দ্বিতীয় চাওয়া কী মালিক আদেশ করুন...?
-আমি পড়া লেখা করিনি। তাই আমার কোনো শিক্ষার সার্টিফিকেট নাই। এত টাকা সম্পত্তি থাকার পরেও কেউ আমাকে সম্মান করে না। আমার পিছন পিছন বলে অশিক্ষিত। তখন আমার খুব দুঃখ হয়। তুমি আমাকে সার্টিফিকেট বানিয়ে দাও।
--চিন্তা করবেন না মালিক আমি এখনি বানিয়ে দিচ্ছি। দৈত্য তাকে এস এস সি থেকে মাস্টার্স পাশের সার্টিফিকেট বানিয়ে দিলো। লোকটি এবার অনেক খুশি। তার আর কোনো দুঃখই রইল না। সব দুঃখের সমাধান করে দিয়েছে দৈত্য। তার প্রিয় ঘোড়াটিকে জড়িয়ে ধরে চুমু খাওয়া শুরু করল। দৈত্য বললো মালিক আপনার তিন নাম্বার শেষ ইচ্ছা বলুন তারপর আমি চলে যাবো আমার জন্য আমার বউ অপেক্ষা করছে।
লোকটি চিন্তায় পড়ে গেলো। আর তো কিছু চাওয়ার নেই। কী চাইবে সবই তো আছে,যা ছিল না তাও পেয়েছে। অনেক্ষণ চিন্তা করে তার প্রিয় ঘোড়াটির দিকে তাকালো। মনে মনে চিন্তা করল আমি এখন এত শিক্ষিত একজন লোক সেই অনুযায়ী আমার ঘোড়ার তো অন্তত অষ্টম শ্রেণী পাশের একটা সার্টিফিকেট থাকা প্রয়োজন। দৈত্যকে বললো আমার ঘোড়াটিকে একটি অষ্টম শ্রেণী পাশের সার্টিফিকেট বানিয়ে দাও।

No comments:
Post a Comment