Wednesday, April 22, 2015

নৈসর্গিক শহর চাঁপাইনবাবগঞ্জ

রফিকুল ইসলাম সাগর
বাংলাদেশের সবুজ বেষ্ঠিত নৈসর্গিক শহর দেখতে গিয়েছিলাম চাঁপাইনবাবগঞ্জ। সেখানে পৌছানোর পর লক্ষ্য করলাম আমের বাগান ও পথের দু'পাশে সারি সারি আমগাছ। আমের মৌসুমে এখানে এলে মনে হবে এ যেন আমের দেশ। চাঁপাইনবাবগঞ্জ শহরের সর্বত্রই প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ও পাখির গান। নেই কোনো কোলাহল। মন চাঙ্গা হয়ে যাবে লাখ লাখ আমগাছ দেখে। মনে হয়েছিল এখন যদি শীতকাল না হয়ে গ্রীষ্মকাল হতো। এখানে দেখার মতো আছে অনেক কিছু_ নুসরাত শাহ নির্মিত সোনামসজিদ, ঐতিহাসিক কানসাট ও মহানন্দা নদী পার হলে চোখে পড়বে পথের দু'পাশে বাহারি আমের সারি সারি গাছ, যা আপনার মনে নাড়া দেবে। সময় কম। ঘুরতে হবে অনেক জায়গা, দেখতে হবে অনেক কিছু। চলে গিয়েছিলাম ভারত সীমান্তের কাছে খানাইয়াদীঘি মসজিদ দেখতে। বিশাল এক দীঘির পাড়ে নির্মিত খানাইয়া মসজিদ। ১৪শ' সালের দিকে এ মসজিদ নির্মিত, যা স্থানীয়দের কাছে চামচিকা ও রাজবিবি মসজিদ নামে পরিচিত। সেখান থেকে ফিরে আসার সময় লক্ষ্য করলাম শাক-সবজির বাগান। কিনে নিলাম কিছু শাক-সবজি। এক আত্মীয়ের বাড়িতে গিয়ে এসব শাক-সবজি রান্না করতে বললাম। এর সঙ্গে গরুর মাংস দিয়ে রাতের খাবার সেরে নিলাম। পরদিন সকালে সেখানকার গ্রামীণ জীবন দেখলাম। দেখতে গেলাম ছোট সোনামসজিদ। সোনামসজিদ যাওয়ার পথে আমগাছগুলো দেখে ছোটবেলার আম চুরির কাহিনী মনে পড়ে গিয়েছিল। বড় সোনামসজিদটি ভারতের গৌড়ে অবস্থিত মুসলিম যুগের স্থাপত্য নিদর্শন। 
মসজিদটির নির্মাণকাল সঠিকভাবে জানা যায়নি। এটি নির্মাণ করেছিলেন সুলতান হোসেন শাহের ছেলে সুলতান নাসির উদ্দিন নুসরত শাহ। এ মসজিদের গম্বুজগুলোর উপর সোনালি রঙের আস্তরণ ছিল। এই থেকে মসজিদটির নাম হয় সোনামসজিদ। এখানকার সাজানো গোছানো আমের বাগান দেখে বুঝতে পারলাম এখানকার মানুষ খুবই পরিষ্কার-পরিছন্ন। 
এখানে জড়িয়ে আছে প্রাচীন বাংলার ইতিহাস, আছে প্রচুর পুরনো মন্দির। বিকেলে বাড়ি ফেরার জন্য তোড়জোড় শুরু হয়ে গেল, রওনা হলাম ঢাকার উদ্দেশে। 


০৩ মার্চ ২০১২ দৈনিক সমকাল -এর আজ শনিবার পাতায় প্রকাশিত

No comments:

Post a Comment