-রফিকুল ইসলাম সাগর
খুব সকাল থেকেই একে একে এসে হাজির হয়েছেন সবাই বনানী দুই নাম্বার রোডের সড়কে নির্মিত অস্থায়ী মঞ্চের সামনে প্যান্ডেলের নিচে। বাবুর্চিদের তখনও রান্না শেষ হয়নি। সেচ্ছায় অনেকে যার যার দায়িত্ব বুঝে নিয়েছিলেন।
খুব সকাল থেকেই একে একে এসে হাজির হয়েছেন সবাই বনানী দুই নাম্বার রোডের সড়কে নির্মিত অস্থায়ী মঞ্চের সামনে প্যান্ডেলের নিচে। বাবুর্চিদের তখনও রান্না শেষ হয়নি। সেচ্ছায় অনেকে যার যার দায়িত্ব বুঝে নিয়েছিলেন।
বনানী দুই নাম্বার রোড ট ব্লক ওয়েলফেয়ার সোসাইটির উদ্যেগে এইবারই প্রথম পহেলা বৈশাখের দিন 'বনানী দুই নাম্বার রোড বসবাসরত এলাকাবাসী পুনর্মিলন ২০১৩ ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের' আয়োজন করা হয়। উপস্থিত সবাই একই এলাকায় থাকেন কিন্তু নানান রকমের ব্যস্ততার কারণে সবার সাথে সবার দেখা হয়না। এলাকার সবাই এক সাথে একদিন কাটানোর জন্যই আয়োজন করা হয় এই অনুষ্ঠান।
দুই নাম্বার রোড এলাকাবাসী প্রায় সবাই হাজির হয়েছিলেন। একই প্যান্ডেলের নিচে সবাই সবাইকে পেয়ে আনন্দ মুখর পরিবেশে কেটেছে সময়। আগামীতে প্রতি বছর এরকম অনুষ্ঠানে অংশ নেয়ার আগ্রহ প্রকাশ করেন অনেকে। এলাকায় অনেক মানুষ থাকে, এমন হয় প্রতিদিন পথে দেখা হয় কিন্তু কথা হয় না, ব্যক্তিগত ভাবে মানুষটির সাথে পরিচয় নেই। পহেলা বৈশাখ উপলক্ষে আয়োজিত পুনর্মিলন অনুষ্ঠানে সেই মানুষটির সাথে পরিচিত হওয়ায় খুশি হয়েছেন অপরিতিচিত জনেরা।
সকালে নাস্তার তালিকায় সবার জন্য ছিল পান্তা ভাত,ইলিশ মাছ,আলু ভর্তা,মরিচ ভর্তা ও শুটকি ভর্তা। আন্তরিকতার সাথে সবাই নিজ নিজ খাবার প্লেট হাতে নিয়ে বসে পড়ে খাবার টেবিলে এ যেন ছিল পারিবারিক অনুষ্ঠান।
সকালের পর থেকে দুপুরের আকাশটা ছিল মেঘলা। তার সাথে প্রচন্ড বাতাস যেন বলে যাচ্ছিলবৈশাখ এসেছে। উপস্থিত অনেকেই ধারণা করেছিল বৃষ্টি হবে। কিন্তু না শেষ পর্যন্ত বৃষ্টি হয়নি।
দুপুরে পোলাও ভাত,মুরগি ও গরুর মাংশ দিয়ে খাবার শেষ করে নিজ নিজ আসনে বসে একে অপরের সাথে গল্পে মেতেছিল আগতরা। কারো আলোচনায় ছিল দেশের বর্তমান পরিস্থিতি,কেউ কেউ রাজনৈতিক,কেউ পারিবারিক আবার কেউ অনেকদিন পর কারো সাথে দেখা হওয়ার সুবাদে কার কী অবস্থা সেই হাল জেনে নিচ্ছিলো। এরই মাঝে বিকেল বেলা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান শুরু করার প্রস্তুতি চলছিল।
সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান শুরু করার পূর্বে বনানী দুই নাম্বার রোড ওয়েলফেয়ার সোসাইটির উপদেষ্টা এলাকার সম্মানিত ব্যক্তি আব্দুল গাফফার,হিটু,আব্দুল মুনসুর দুলাল,আব্দুল খালেক ও সোসাইটির সভাপতি জয়নাল আবেদীনকে মঞ্চে আমন্ত্রণ জানান অনুষ্ঠান উপস্থাপক আব্দুল কাদের।
অনুষ্ঠান সূচনায় বক্তব্য রাখেন বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল কাদের ও সোসাইটির সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর হোসেন। তারপর শুরু হয় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। অনুষ্ঠানে সঙ্গীত পরিবেশন করেন বাংলাদেশ বেতারের তালিকাভুক্ত শিল্পী শামসুল হুদা মেহেদী ও তার দল। একতারা,হারমনি ও তবলা বাজিয়ে শিল্পীরা মাটির গান,বাংলার গান গেয়ে মাতিয়ে রেখেছিলেন দর্শকদের। গান গুলো মনে করিয়ে দিচ্ছিল আমাদের বাংলার ঐতিহ্যকে। যা আমরা হিন্দি ও ইংলিশ গানের মাঝে ভুলতে বসেছি। একে একে গান ও কবিতা আবৃতি করে এলাকার শিল্পীরা। রাতে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের সমাপ্তি ঘোষণা করা হয়।
এই অনুষ্ঠান সফল করতে যারা অনেক পরিশ্রম করেছেন--জাহাঙ্গীর হোসেন,আনোয়ার হোসেন,শেখ আনোয়ার আলী কালু,অলি মিয়া,সহীদ ও জুয়েল।
২৬ এপ্রিল ২০১৩ দৈনিক সংবাদে প্রকাশিত

No comments:
Post a Comment